আবু বকর ইবনে কুহাফা

 আবু বকর ইবনে কুহাফা ( আরবি: أبو بكر بن كحافة; ২৭ অক্টোবর, ৫৭৩–২৩ আগস্ট, ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একজন প্রধান সাহাবি, ইসলামের প্রথম খলিফা। প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনি একজন এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীর সম্মান তাকেই দেওয়া হয়। এছাড়া তিনি রাসুল মুহাম্মাদের শ্বশুর ছিলেন। [১] মুহাম্মাদ সা. এর মৃত্যুর পর তিনি খলিফা নির্বাচিত হন এবং মুসলমানদের নেতৃত্ব দেন। মুহাম্মাদ সা. এর প্রতি অতুলনীয় বিশ্বাসের জন্য তাকে “সিদ্দিক” বা বিশ্বস্ত উপাধি প্রদান করা হয়। [১] মিরাজের ঘটনা তিনি এক ব্যক্তির কাছে শুনেই বিশ্বাস করেন। তাই তাঁর নামের শেষে "সিদ্দিক" উপাধি যুক্ত করে তাকে! আবু বকর সিদ্দিক" নামে সম্বোধন করা হয়।

তরুণ বয়সে আবু বকর (রা.) একজন বণিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। তিনি প্রতিবেশী সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ অন্যান্য অঞ্চলে ব্যবসায়িক কারণে ভ্রমণ করেন। এর মাধ্যমে তিনি সম্পদশালী হয়ে উঠেন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি তার গোত্রের একজন নেতা হয়ে উঠেন। [২] একবার ইয়েমেন থেকে বাণিজ্য শেষে ফেরার পর তিনি মুহাম্মাদ সা. কর্তৃক ইসলাম প্রচারের সংবাদ পান এবং এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণ অন্য অনেককেই ইসলাম গ্রহণে উৎসাহ যোগায়।[৩] তাঁর মেয়ে আয়িশা রা. এর সাথে মুহাম্মাদ সা. এর বিয়ের ফলে তাঁদের দুজনের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে।[১]

আবু বকর একজন একনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আজীবন মুহাম্মাদ সা. এর সহযোগিতা করেছেন।[৪] জীবদ্দশায় তাঁর সাথে আবু বকর বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নোন। তাবুকের যুদ্ধে তিনি তার সমস্ত সম্পদ দান করে দেন।[৫] হুদায়বিয়ার সন্ধিতে আবু বকর অংশ নিয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন এই চুক্তির অন্যতম সাক্ষী।[৫]

তাঁর খেলাফত ২ বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী হয়। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান। খিলাফতকাল দীর্ঘ না হলেও তিনি একজন সফল শাসক ছিলেন। মুহাম্মদ সা. এর মৃত্যুর পর নবুওয়ের দাবি-করা ব্যক্তিদের তিনি রিদ্দার যুদ্ধে সফলভাবে দমন করেন এবং তৎকালীন দুটি পরাশক্তি পারস্য ও বাইজেন্টাইনদের উপর সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন এবং তাঁরই অভিযানের ধারাবাহিকতায় মাত্র কয়েক দশকে মুসলিম খিলাফত ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্যের একটিতে পরিণত হয়।